১০০ বছর বাঁচতে চান? আজই এই খাবারগুলো প্লেটে রাখুন...

Health-Food

মানুষ বর্তমানে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং অনিয়মিত জীবনযাপনে অভ্যস্ত। এতে দীর্ঘ জীবন তো দূর অস্ত, তার অনেক আগেই জীবনের ইনিংসের ইতি হয়ে যেতে পারে। তাই সাধু সাবধান! জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে আজই। তাহলেই বড়সড় বদল আসবে জীবনে। বিশেষত, খাবার প্লেটে একটু বদল আনলে দীর্ঘ জীবন, এমনকী সেঞ্চুরিও পার করা যেতে পারে বলে মত দিচ্ছেন তাবড় চিকিৎসকরা। এখানে সেই খাদ্য তালিকা সম্বন্ধে জেনে নেওয়া যাক।

লিভার এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মাংস: ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ জেনারেল মেডিসিনে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে ১৭০ টিরও বেশি দেশে দীর্ঘ জীবন পেতে লিভার এবং অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মাংস খাওয়ার চল রয়েছে। মাংস সবচেয়ে বেশি পুষ্টির জোগান দেয়। জেনেটিক এবং শারীরবৃত্তীয় সমস্যা থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।

কম তাপে ডিম: অতিরিক্ত তাপে ডিম রান্না করলে তাতে থাকা পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। তাই অল্প তাপে ডিম রান্না করার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এর ফলে ১/৩ গুণ কম কোলেস্টেরল, ১/৪ গুণ কম স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ২/৩ গুণ বেশি ভিটামিন পাওয়া যাবে। শুধু তাই নয়, ২ গুণ বেশি ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ৭ গুণ বেশি বিটা ক্যারোটিন মিলবে।

তৃণভোজী প্রাণীর মাংস: বিশেষজ্ঞদের মতে, তৃণভোজী প্রাণীর মাংস ফাইটোকেমিক্যাল সমৃদ্ধ। ঘাসে পাওয়া ফাইটোকেমিক্যাল প্রোটিন অক্সিডেশন এবং লিপিড পার-অক্সিডেশন থেকে মাংসকে রক্ষা করে। এই দুটি মানুষের হৃদরোগ এবং ক্যান্সারে নিম্ন-গ্রেড সিস্টেমিক প্রদাহ সৃষ্টি করে বলে প্রমাণিত হয়েছে।

ওয়াইল্ড স্যামন: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২৬০০ জনেরও বেশি বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের উপর করা গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে যাঁরা নিয়মিত স্যামন, ম্যাকেরেল, হেরিং, লেক ট্রাউট এবং অ্যালবাকোর টুনা খান, তাঁদের রক্তে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের মাত্রা সর্বাধিক থাকে। এবং অন্যদের তুলনায় তাঁরা গড়ে দুই বছর বেশি বাঁচেন।

ফার্মান্টেড খাবার: দই, আচারের মতো ফার্মেন্টড খাবারে থাকে প্রচুর পরিমাণে প্রোবায়োটিক, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মতো উপকারী উপাদান। তাই দীর্ঘজীবন লাভ করতে চাইলে এই খাবারগুলি ডায়েটে থাকতেই হবে।

বেরি: এগুলি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ। নিয়মিত বেরি খেলে রক্তচাপ কমে। এলডিএল কোলেস্টেরল উন্নত হয়। এতে ক্যানসার বিরোধী বৈশিষ্ট্যও রয়েছে। মস্তিষ্কের জন্য ভালো।

বেদানা: বেদানায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবারসহ ভিটামিন কে, সি ও ভিটামিন বি রয়েছে। এছাড়াও আয়রন, পটাশিয়াম, জিঙ্ক ও ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিডের মতো প্রচুর মিনারেল উপস্থিত বেদানাতে। এগুলি শরীরকে চাঙ্গা করে, বার্ধক্য দূরে রাখতে সহায়তা করে।

মাশরুম: এর জৈব উপাদান ডিমেনশিয়া ও অ্যালঝাইমারের ঝুঁকি কমায়। হার্টের রোগের ক্ষেত্রেও সুরক্ষা দেয়। মাশরুমে রয়েছে পটাসিয়াম, ফাইবার ও এনজাইম। এইসবের উপস্থিতি কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকি কমায়। মাশরুমে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বেটাগ্লুকান, প্রোটিন ও ভিটামিন। এগুলি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। মাশরুমে রয়েছে ভিটামিন ডি। যা ক্যালসিয়ামের চাহিদা মেটায়। হাড় শক্ত রাখতে সাহায্য করে মাশরুম।

বীজ: ষ্টিগুণ বাড়াতে অনেকেই ইদানীং খাবারে যোগ করছেন নানা প্রকার বীজ। এগুলি কেবল স্বাদ বাড়াতেই নয়, এই সব বীজ শরীরের জন্যেও দারুণ উপকারী। ফ্ল্যাক্স, শিয়া, পাম্মকিন, সানফ্লাওয়ার, এডিবল ইত্যাদি বীজ ফাইবার, প্রোটিন, ক্যালশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ়, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টি অক্সিড্যান্টে ভরপুর। এগুলি শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। হার্টকে সুস্থ রাখে।

মাংসের চর্বি: বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাণীদেহে থাকা স্যাচুরেটেড ফ্যাট ডায়েটে রাখলে স্ট্রোকের সম্ভাবনা ২১ শতাংশ কমিয়ে দেয়। তাই মাংসের মতো চর্বিও সমান উপকারে লাগে।